পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই সেন্ট্রাল ব্যাংক রয়েছে। দেশের অর্থনীতিতে সেন্ট্রাল ব্যাংকের বিভিন্ন ভূমিকা রয়েছে, কিন্তু এর প্রধান কাজ হল দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা করা। আর সে জন্যই দেশের অর্থনীতি একটি সুদৃঢ় অবস্থানে নিয়ে যেতে সেন্ট্রাল ব্যাংক বা কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম পদক্ষেপ গ্রহন করে। আর সেই পদক্ষেপগুলোই বিভিন্নভাবে ফরেক্স মার্কেটে নানা প্রভাব ফেলে।
সেন্ট্রাল ব্যাংক হলো ঋণের সর্বশেষ আশ্রয়স্থল – অধ্যাপক হট্টে
সেন্ট্রাল ব্যাংক হলো একটি ঋণ নিয়ন্ত্রণকারী ব্যাংক – অধ্যাপক শ
সেন্ট্রাল ব্যাংক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কার্যাবলী সম্পাদন করে থাকে যেমনঃ
মুদ্রা ছাপানোঃ দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনা করে সেন্ট্রাল ব্যাংক নোট এবং মুদ্রা ছাপায় এবং সংকট সামাল দেয়ার চেষ্টা করে। আমরা যে কিছুদিন পর পর নতুন নতুন নোট দেখতে পাই, তা বাংলাদেশের সেন্ট্রাল ব্যাংক – বাংলাদেশ ব্যাংকের তত্ত্বাবধানেই হয়ে থাকে। যখন সরকার বন্ড বিক্রি করে লোণ পরিশোধ করতে পারেনা, তখন মুদ্রা ছাপিয়ে অবস্থা সামাল দেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু অতিরিক্ত মুদ্রা ছাপানোর ফলে অর্থনীতিতে খারাপ প্রভাব পড়ার সুযোগ থাকে।
মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রনঃ বাজারে অতিরিক্ত মুদ্রার সরবরাহ বেড়ে গেলে মুদ্রাস্ফীতি বা Inflation বেড়ে যায়। এতে মুদ্রার মান কমে জায় এবং কারেন্সি দুর্বল হয়ে পরে। সেন্ট্রাল ব্যাংক মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রনে কাজ করে থাকে।
ইন্টারেস্ট রেট নির্ধারণঃ সেন্ট্রাল ব্যাংক ইন্টারেস্ট রেট নির্ধারণ করে থাকে। ইন্টারেস্ট রেট বৃদ্ধির মাধ্যমে সেন্ট্রাল ব্যাংক নতুন ইনভেস্টরদেরকে মার্কেটে বিনিয়োগ করতে উৎসাহী করে তোলে। ফলে ঐ দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী হয় এবং কারেন্সিও শক্তিশালী হয়। অপরদিকে ইন্টারেস্ট রেটের হার কমাতে থাকলে ‘ইকনোমিক বাবল’ হওয়ার সুযোগ থাকে।
ফিসক্যাল সমস্যা সমাধানঃ ফিসক্যাল বা জাতীয় ঋণ কমিয়ে আনার ব্যাপারে সেন্ট্রাল ব্যাংক কাজ করে এবং নীতিমালা নির্ধারণ করে।
ক্যাশ রিসার্ভ রেশিওঃ ক্যাশ রিসার্ভ রেশিও নির্ধারণের মাধ্যমে সেন্ট্রাল ব্যাংক মার্কেটে মানি সাপ্লাই নিয়ন্ত্রন করে।
এছাড়াও সেন্ট্রাল ব্যাংক নানা কাজ করে থাকে। ফরেক্স ইকনোমিক ক্যালেন্ডারে দেখবেন প্রায় প্রতিদিন সেন্ট্রাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের বিভিন্ন মিটিং থাকে। এসব মিটিংয়ে এই সকল বিষয় নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
ইন্টারেস্ট রেট বাড়ানোর ব্যাপারে কথা বললে বা ইঙ্গিত দিলে বা মুদ্রা ছাপানোর কথা বললে তা কারেন্সিকে শক্তিশালী করে। এটাকে More hawkish than expected বলা হয়। ইন্টারেস্ট রেট কমানোর ব্যাপারে কথা বললে বা নেতিবাচক ইঙ্গিত দিলে তা কারেন্সিকে দুর্বল করে। এটাকে More Dovish than expected বলা হয়। এসব ইকনোমিক ইভেন্ট ফরেক্স মার্কেটে ভাল প্রভাব ফেলে থাকে।
মজার বিষয় হল যে, অনেক দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক শুধু সরকারী মালিকানাধীন নয়। সরকারি মালিকানার পাশাপাশি এগুলো বেসরকারি কিংবা বাণিজ্যিক ব্যাংকের মালিকানাধীনও হয়ে থাকে। এমনকি আমেরিকার ফেডারেল রিসার্ভ সিস্টেমেও বিভিন্ন সরকারি সংস্থা বা ব্যাংকগুলোর পাশাপাশি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মালিকানা রয়েছে।